গত ৯ নভেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে হারিয়ে জয় নিশ্চিত করেন জো বাইডেন। বুধবার পরবর্তী মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে ক্ষমতা গ্রহণ করবেন তিনি। সে হিসেবে মঙ্গলবার ট্রাম্পের আনুষ্ঠানিক কর্মদিবসের শেষ দিন। সিএনএনের প্রতিবেদনে এই তথ্য পাওয়া যায়।
চার বছরের ক্ষমতায় নানা ধরনের বিতর্কিত ও উদ্ভদ কর্মকাণ্ডের কারণে আলোচনা-সমালোচনার জন্ম দিয়েছেন ট্রাম্প। ক্ষমতায় থাকাকালীন ট্রাম্পের সঙ্গে সবচেয়ে বেশি যে নামটি শোনা গেছে তিনি হলেন মেলানিয়া ট্রাম্প। প্রেসিডেন্ট থাকা অবস্থায় ট্রাম্প এবং মেলানিয়ার বেশ কিছু ঘটনা নিয়েও কম আলোচনা হয়নি।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের বিদায়ী প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প মঙ্গলবার তার শেষ কর্মদিবসেও শতাধিক সাধারণ ক্ষমার আদেশে সই করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানিয়েছেন সিএনএন। রোববার হোয়াইট হাউসের বিশেষ এক সভায় প্রেসিডেন্টের সাধারণ ক্ষমা পাওয়ার জন্য ওই তালিকা চূড়ান্ত করা হয়।
২০ জানুয়ারি দুপুরে নতুন প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেওয়ার আগপর্যন্ত তিনি সাধারণ ক্ষমাপত্রে সই করতে পারবেন। সাধারণ ক্ষমার মধ্যে দণ্ড মওকুফ, বিচার থেকে দায়মুক্তি এবং দণ্ড কমানোর আদেশ রয়েছে। প্রেসিডেন্ট হিসেবে ডোনাল্ড ট্রাম্প এ পর্যন্ত ৯৪ জন সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তির মুক্তি ও সাজা কমিয়ে দিয়েছেন। রোববারে ওই সভায় প্রেসিডেন্টের সাধারণ ক্ষমা পাওয়ার জন্য আরও শতাধিক ব্যক্তির তালিকা চূড়ান্ত করা হয়।
বিভিন্ন গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, রোববার দিনভর হোয়াইট হাউসে তালিকা হালনাগাদ করা হয়েছে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প যেমন তার নিজস্ব লোকজনকে সাধারণ ক্ষমা প্রদান করবেন, কাউকে কাউকে অপরাধ থেকে আগাম মুক্তিও দেবেন। এ ক্ষেত্রে মার্কিন সংবিধানে প্রেসিডেন্টকে অবারিত ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে।
নিউইয়র্ক টাইমস এ সংক্রান্ত প্রতিবেদনে বলেছে, হাজার হাজার ডলারের বিনিময়ে লবিস্ট নিয়োগ করেও প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সাধারণ ক্ষমার তালিকায় নাম ঢোকানোর তদবির চলেছে শেষ মুহূর্তে।
৩ নভেম্বর নির্বাচনে হেরে যাওয়ার পর থেকেই ডোনাল্ড ট্রাম্প তার নিজস্ব লোকজনকে সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা শুরু করেছেন। ৬ জানুয়ারি ক্যাপিটল হিলে হামলার ঘটনার পর ট্রাম্পের সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা থেমে যায়।
এখন ট্রাম্পের হাতে আর সময় নেই। তার পরিবারের লোকজন, রাজনৈতিক সহযোগী, আইনজীবী রুডি জুলিয়ানিসহ অনেককেই আগাম সাধারণ ক্ষমা বা বিচারপ্রক্রিয়া থেকে মুক্তি দেওয়ার নির্দেশনায় তিনি সই করবেন বলে মনে করা হচ্ছে।
ডোনাল্ড ট্রাম্পের সর্বশেষ সাধারণ ক্ষমার তালিকায় কাদের নাম থাকছে, তা জানা যায়নি। শোনা যায়, ট্রাম্প তার নিজের জন্য ক্ষমাপত্রে সই করতে পারেন। মার্কিন সংবিধানে বিষয়টি স্পষ্ট নয়। প্রেসিডেন্ট নিজের ক্ষমাপত্রে সই করতে পারেন কি না, এ নিয়ে মার্কিন আইন বিশ্লেষকেরা অনেকটাই বিভক্ত। কারণ, বিষয়টি নিয়ে আর কখনো সুপ্রিম কোর্টে আলোচনা হয়নি। যদিও ট্রাম্প বলেছেন, তিনি নিজের ক্ষমাপত্রে সই করার ক্ষমতা রাখেন।
৬ জানুয়ারি ক্যাপিটল হিলে হামলার পর নিজের ক্ষমাপত্রে সই না করতে ট্রাম্পকে তার ঘনিষ্ঠজনেরা পরামর্শ দিয়েছেন। এতে ৬ জানুয়ারি ঘটনার জন্য ট্রাম্পকে দায়ী করার সুযোগ বাড়বে বলে মনে করা হচ্ছে। এই দিনের ঘটনায় উসকানিমূলক বক্তব্য দেওয়ার জন্য তার বহু অপকর্মের পরামর্শদাতা রুডি জুলিয়ানির নাম এই তালিকায় থাকবে বলে অনুমান করা হচ্ছে।