ওয়েস্ট ইন্ডিজকে দ্বিতীয় ইনিংসে দ্রুত অলআউট করাটাই ঢাকা টেস্টে এখন লক্ষ্য বাংলাদেশের। সে পথে ভালোভাবেই এগিয়ে যাচ্ছে টাইগাররা। ৩৯ রানেই তিন সফরকারী ব্যাটসম্যানকে সাজঘরে ফিরেয়েছে তারা। তাইজুল, মিরাজ, নাঈম তিন স্পিনারই পেয়েছেন একটি করে উইকেট। তৃতীয়দিন শেষে ৩ উইকেটে ৪১ রান নিয়ে দিনশেষ করেছে সফরকারীরা। ১৫৪ রানে এগিয়ে আছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
প্রথম ইনিংসে ৪০৯ রানের বড় সংগ্রহ গড়েছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। জবাব দিতে নেমে ১১ রানেই বাংলাদেশ হারিয়েছিল দুই উইকেট, ৭১ রানে নেই চারটি। বাংলাদেশ ছিল বিপদে। ঢাকা টেস্টের তৃতীয় দিনে চার উইকেট হারিয়ে ১০৫ রান নিয়ে শুরু করেছে বাংলাদেশ।
মুশফিকের সঙ্গে ৭১ রানের জুটি গড়ে সাজঘরে ফিরলেন মোহাম্মদ মিঠুন। কর্নওয়ালের বলে তালুবন্দী করেন ক্যারিবিয়ান অধিনায়ক। মিথুনের ব্যাট থেকে আসে ১৫ রান। তবে এ ইনিংসটি তিনি খেলেছেন ৮৬ বলে।
এরপর ২২তম টেস্ট ফিফটির দেখা পেলেন মুশফিকুর রহিম। দৃঢ় ব্যাটিংয়ে দলের রানের চাকা সচল রাখছেন এ ব্যাটসম্যান। ৮৯ বলে ফিফটি পেয়েছেন ডানহাতি ব্যাটসম্যান। ফিফটির ইনিংসে ছিল ৬ বাউন্ডারি।
যেখানে টিকে থাকাই মূল লক্ষ্য, সেখানে মুশফিক দেখাতে গেলেন বিশেষ কিছু। যেটি সচরাচর সীমিত ওভারের ক্রিকেটে দেখা যায়, সেই রিভার্স সুইপ মুশফিক করলেন এমন দেয়ালে পিঠ থাকা অবস্থায়। কর্নওয়ালের বলে রিভার্স সুইপ করতে গিয়ে টাইমিংয়ে গড়বড় হয়ে কাইল মেয়ার্সের তালুবন্দী হল তাতে বিপদ আরও বাড়লো বাংলাদেশের।
একটা সময় জেঁকে বসেছিল ফলো-অনে পড়ার শঙ্কা। লিটন দাস ও মেহেদী হাসান মিরাজের কল্যাণে সেটা থেকে উদ্ধার হয় বাংলাদেশ। দারুণ ব্যাটিংয়ে দলকে এগিয়ে নিয়েছেন তারা। দুজনের জুটিতে এসেছে ১২৬ রান। দুজনেই বড় স্কোরের দিকে এগুচ্ছিলেন। এমন সময় রাহকিমের ঘূর্ণিতে ব্লাকউডের তালুবন্দী হয়ে সাজঘরে ফেরেন লিটন। ১৩৩ বল খেলে নিজের ঝুলিতে পুরেছেন ৭১ রান। লিটনের বিদায়ের রেশ না কাটতেই একই ওভারে রাহকিমের শিকার হন নাঈম।
পরের ওভারে ফিরে যান মেহেদি হাসান মিরাজও। ১৪০ বল খেলে ৬টি চারের সাহায্যে ৫৭ রান করে ফেরেন মিরাজ। বড় রান পাননি তাইজুল (১৩), রাহি (১)। শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশ থেমেছে ২৯৬ রানে।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের পক্ষে কর্নওয়াল ৭৪ রান খরচায় নিয়েছেন ৫ উইকেট। শ্যানন গ্যাব্রিয়েল ৩টি ও আলগরি জোসেফ ২টি উইকেট নিয়েছেন।
বড় লিড নিয়ে শেষ সেশনের দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিংয়ে নামে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এরপর শুরুতেই রিভিও নিয়ে সফল টাইগার কাপ্তান মুমিনুল। নাঈম ইসলামের বলে ক্যারিবিয় ওপেনার ক্রেইগ ব্র্যাথওয়েট ক্যাচ দেন উইকেটের পেছনে। আম্পায়ার শুরুতে তাকে আউট দেননি। লিটনের আত্মবিশ্বাসী আবেদন মুমিনুল রিভিউ চান। তাতে ফল বাংলাদেশের পক্ষে আসে। তার আউটের সময় ওয়েস্ট ইন্ডিজের রান ১ উইকেটে ১১। এর আগে প্রথম ইনিংসে ব্র্যাথওয়েট ৪৭ এবং চট্টগ্রামে ৭৬ ও ২০ রান করেছিলেন।
চতুর্থ বাংলাদেশি ক্রিকেটার হিসেবে একশ উইকেট নেওয়ার কীর্তি গড়লেন মেহেদী হাসান মিরাজ। শেন মোসলেকে দ্বিতীয় স্লিপে মিথুনের হাতে তালুবন্দি করিয়ে শততম উইকেটের স্বাদ নেন মিরাজ। সবচেয়ে দ্রুত ও সবচেয়ে কম বয়সে উইকেটের সেঞ্চুরি পূর্ণ করেছেন ডানহাতি অফস্পিনার। এর আগে বাংলাদেশের হয়ে একশ উইকেট নিয়েছেন মোহাম্মদ রফিক, সাকিব আল হাসান ও তাইজুল ইসলাম।