টিভি ব্রেকিংঃ
ঝিনুক টিভির পক্ষথেকে সকল দর্শকদের জানাচ্ছি আন্তরিক শুভেচ্ছা। ঝিনুক টিভি আসছে নতুন নতুন সব আয়োজন নিয়ে। পাশেই থাকুন
দ্রুত অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি সত্ত্বেও চীনা তরুণরা ভবিষ্যত নিয়ে কেন হতাশ?

দ্রুত অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি সত্ত্বেও চীনা তরুণরা ভবিষ্যত নিয়ে কেন হতাশ?

চীনের ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির পরেও জীবনমান নিয়ে নাগরিকদের হতাশা বাড়ছে। দেশটিতে অস্বাভাবিক হারে আবাসন খরচ বৃদ্ধি, অর্থনৈতিক বৈষম্য এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রীর দাম নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোতে হতাশা প্রকাশ করছে চীনা তরুণরা।

করোনাভাইরাসের ধাক্কা দ্রুত কাটিয়ে ওঠার পরে, চীন গত বছর ইতিবাচক প্রবৃদ্ধি অর্জনকারী একমাত্র দেশ। এর মোট অভ্যন্তরীণ পণ্য (জিডিপি) ২০২০ সালে প্রথমবারের মতো ১০০ ট্রিলিয়ন ইউয়নে (মার্কিন ডলারে ১৫.৪ ট্রিলিয়ন) দাঁড়ায়। যা গোটা বিশ্বের অর্থনীতির প্রায় ১৭ শতাংশ।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ২০২৮ সালের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রকে ছাড়িয়ে চীন পৃথিবীর সবচেয়ে শক্তিধর অর্থনীতিতে পরিণত হবে।

কিন্তু এই দারুণ পরিসংখ্যান চীনের মানুষের বর্তমান অবস্থা বোঝানোর জন্য যথেষ্ট নয়। আকাশচুম্বী বাড়িভাড়া, বৈষম্য বৃদ্ধি এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম নিয়ে হতাশ চীনা জনগণ। বিশেষত তরুণ চীনারা তাদের হতাশার কথা তুলে ধরছেন বিলিবিলি বা ওয়েইবো’র মতো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোতে।

ই-হাউস রিয়েল এস্টেট নামে একটি গবেষণা প্রতিষ্ঠান বলছে, চীনের মানুষের গড় আয়ের চেয়ে আবাসন ব্যয় নয় গুণ বেশি। ২০০৮ সাল থেকে ক্রমবর্ধমান আবাসন ব্যয় বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণের বিষয়ে সরকার বারবার আশ্বাস দিলেও এখন পর্যন্ত তা স্থিতিশীল হয়নি।

চীনের জাতীয় পরিসংখ্যান ব্যুরো (এনবিএস) অনুসারে, গত বছর দেশটিতে খাদ্যের মূল্য বেড়েছে ১.২ শতাংশ। তাজা মাংসের দাম বেড়েছে ৭.১ শতাংশ এবং শুয়োরের মাংসের দাম বেড়ে ৪৯.৭ শতাংশ হারে।

গত মাসে আকস্মিকভাবে শাকসবজির দামও বেড়েছে। সবুজ মরিচ, লাউ এবং বাঁধাকপির দাম ৩০ শতাংশেরও বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির কৃষি মন্ত্রণালয়।

এর মধ্যেই গত মাসে চীনের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ভাইস-গভর্নর চেন ইউলু বলেন, চলতি বছর চীনের মুদ্রাস্ফীতি ‘মাঝারি আকারে বৃদ্ধি’ পাবে।

এমন বক্তব্যের পর চীনের সামাজিক গণমাধ্যমে জনগণের ক্ষোভ দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়ে বলে জানিয়েছে চীনা সংবাদমাধ্যম সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট।

ফেসবুকের অনুকরণে বানানো চীনের নিজস্ব সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ওয়েইবোতে একজন লেখেন, ‘মাঝারি আকারে বৃদ্ধি? আমরা ব্যাঙের মতো সেদ্ধ হয়ে যাচ্ছি আর আপনারা আগুন আরও বাড়াচ্ছেন!’

আরেকজন লেখেন, ‘আপনি কীভাবে এভাবে মুদ্রাস্ফীতির মতো সমস্যাকে মহিমান্বিত করতে পারেন? মাঝারি বৃদ্ধি মানে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম দ্বিগুণ হওয়া!’

এরপরও চীন সরকার দেশের উন্নয়নের বিষয়ে গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে যথেষ্ট ইতিবাচক বার্তা দিয়ে থাকে।

বেইজিং ভিত্তিক একজন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক এবং স্বাধীন গবেষক উ চিয়াং বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে চীনের অর্থনীতি সম্পর্কে আশাবাদ বেশিরভাগই ‘কমিউনিস্ট পার্টির প্রপাগান্ডা’।

তিনি আরও বলেন, ‘গণমাধ্যমে চীনা জাতীয়তাবাদের প্রচারের মাধ্যমে মানুষকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে চায় সরকার। যার মাধ্যমে জনগণকে সত্যিকারের সাম্য এবং রাজনৈতিক অধিকার না দিয়ে ফাঁকা স্লোগানের মাধ্যমে বৈষম্যকে আড়াল করে চলেছে চীন সরকার। এর প্রতিফলন ঘটে সাধারণ মানুষের জীবনে, তারাই কষ্ট ভোগ করে যাচ্ছে।

শেয়ার করুনঃ

Comments are closed.

© All rights reserved © 2020 | jhenuktv.com
Developed BY POS Digital