কারাগারে প্রেরণকৃতরা হলো: মামলার প্রধান পলাতক আসামী জসিম উদ্দিনের স্ত্রী জান্নাতুর রহমান জুথি, জসিমের বাবা হারুনর রশিদ এবং তার শ্বশুর কাজী শামসুর রহমান। এরা সকলে বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার রাহুতকাঠী গ্রামের। জামিনপ্রাপ্ত দুইজন হলেন জসিমের ভাই এনামুল হক এবং শ্যালক ইমন কাজী।
ট্রাইব্যুনালের বিশেষ পিপি কাইউম খান কায়সার জানান, ২০১৭ সালের আগস্ট থেকে ২০১৮ সালের মে মাস পর্যন্ত বরিশালের উজিরপুর, বাবুগঞ্জ ও মুলাদীর ১৬ জনকে অস্ট্রেলিয়া পাঠানোর কথা বলে দ্বীপরাস্ট্র ভানুয়াতুতে পাচার করে জসিম উদ্দিন, তার স্ত্রী জান্নাতুর রহমান জুথি, ভাই এনামুল হক, বাবা হারুনর রশিদ, শ্বশুড় কাজী শামসুর রহমান, শ্যালক ইমান কাজী ও তার ছোট ভাই পলাশ হাওলাদার।
প্রতিশ্রুত দেশে না পাঠিয়ে ভানুয়াতুতে নিয়ে তাদের অনাহারে একটি জায়গায় আটকে রাখে। সেখান থেকে ১২জন পালিয়ে সে দেশের আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে জানায়। তারা অবৈধ মানব পাচারের অন্যতম হোতা পলাশ হাওলদারসহ ৪জনকে গ্রেফতার এবং পাচারের শিকার সকলকে উদ্ধার করে। এ ঘটনায় ভানুয়াতুতে মামলা দায়ের হয়। ওই মামলায় পলাশ এখনও ভানুয়াতুর জেলে রয়েছে। এরপর ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন অব মাইগ্রেশন (আইওএম) সংস্থার সহায়তায় বাংলাদেশ সরকার ২০১৯ সালের জুলাই মাসে ওই ১৬জনকে দেশে ফিরিয়ে আনে।
পরে তারা টাকা ফেরত চাইলে মানবপাচারকারী চক্র উল্টো ভুক্তভোগীদের বিরুদ্ধে অপহরণ ও চাঁদাবাজী এবং নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে দুটো মামলা দিয়ে তাদের বিপাকে ফেলেন।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগী ১৬ জনের পক্ষে উজিরপুরের মোফাজ্জেল হোসেন বাদী হয়ে ২০১৯ সালের ১৮ নভেম্বর বরিশাল মানব পাচার অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনালে জসিম উদ্দিন ও পলাশ হাওলাদারসহ তাদের নিকটাত্মিয় ৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।
গত ২৯ সেপ্টেম্বর ট্রাইব্যুনাল এই মামলার পলাতক ৭ আসামীর বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা জারীর নির্দেশ দেন। পরে তারা উচ্চাদালত থেকে ৬ সপ্তাহের জামিন নেন। গত মঙ্গলবার আসামীদের জামিনের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় বুধবার ধার্য্য তারিখে ট্রাইব্যুনালে হাজির হয়ে তারা স্থায়ী জামিনের আবেদন করেন। বিচারক ২ জনের জামিন স্থায়ী করেন এবং অপর ৩জনকে কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দেন।