এ গ্রামের প্রায় ৯০ শতাংশ পরিবারের কেউ না কেউ এ পেশায় নিয়োজিত। চাটমোহর পৌরসদর থেকে দুই কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে গ্রামটির অবস্থান। এ গ্রামে প্রায় ৩শ ৩৫ টি পরিবারে ১ হাজার ২শ মানুষের বসবাস। এর মধ্যে প্রায় এক হাজার ব্যক্তির অন্ন বস্ত্রসহ নিত্য প্রয়োজনীয় অন্যান্য সামগ্রীর যোগান আসে পাইপ স্থাপন কাজের মাধ্যমে।
আগশোয়াইল গ্রামের পাইপ স্থাপনকারী নাজিম উদ্দিন (৬৭) জানান, প্রায় ৫০ বছর যাবত এ পেশায় নিয়োজিত আছেন তিনি। সাধারণ নলকূপ, গভীর নলকূপ, অগভীর নলকূপ, সাবমারসিবল পাম্প দ্বারা ভূগর্ভস্থ পানি উপরে তোলার জন্য পাইপ স্থাপনের কাজ করেন তারা। এই গ্রামে ৩২ জন সেট মালিক রয়েছেন। প্রতিটি সেটে ৫ থেকে ৭ জন শ্রমিক কাজ করেন। প্রথমে লোহার পাইপ দিয়ে মাটি খনন করেন তারা। তারপর লোহার পাইপ তুলে ফেলে খনন করা স্থানে সাধারণ নলকূপ, গভীর নলকূপ, অগভীর নলকূপ, সাবমারসিবল পাম্প মালিকের প্লাস্টিক অথবা লোহার পাইপ স্থাপন করেন। সেট মালিক একটি নলকূপের পাইপ স্থাপন করে এক হাজার ৫শ টাকা, একটি অগভীর নলকূপের পাইপ স্থাপন করে ২ হাজার থেকে ২ হাজার ৫শ টাকা করে পান। শ্রমিকেরা প্রতিদিন মজুরী পান ৩শ ৫০ টাকা।
চাটমোহর সরকারী কলেজের সমাজ বিজ্ঞান বিষয়ের শেষ বর্ষের ছাত্র কাওসার (২৩) গত চার বছর যাবত লেখাপড়ার পাশাপাশি পাইপ স্থাপনের কাজ করে আসছেন। কাওসার জানান, পড়া লেখার পাশাপাশি পাইপ স্থাপনের কাজ করে নিজের লেখাপড়ার খরচ চালিয়ে আসছি। পাশাপাশি পরিবারকেও সাহায্য করতে পারছি। এ গ্রামের প্রায় ২৫ জন ছাত্র পাইপ স্থাপনের কাজের সাথে জড়িত। সব মিলিয়ে এ গ্রামের প্রায় এক হাজার ব্যক্তি পাইপ স্থাপনের কাজ করে প্রত্যক্ষ অথবা পরোক্ষ ভাবে উপকৃত হচ্ছেন। তিনি আরো জানান, শুষ্ক মৌসুমে, নভেম্বর থেকে মে মাস পর্যন্ত কাজ বেশি থাকে। অন্য সময় কাজ থাকেনা বললেই চলে। এসময় এ পেশায় নিয়োজিত ব্যক্তিগন বেকার থাকেন। অর্থ কষ্টে ভোগেন। কেউ কেউ অন্য পেশায় ও নিয়োজিত হন।
হরিপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মকবুল হোসেন জানান, এ গ্রামটির শ্রমজীবিদের অধিকাংশই মাটি খনন করে পাইপ স্থাপনের কাজ করে থাকেন। এদের কারো কারো কৃষি জমি ও আছে। অবসর সময় কৃষি কাজ করেন তারা। এ গ্রামে কিছু উচ্চ শিক্ষিত মানুষ ও রয়েছেন যারা দেশের বিভিন্ন স্থানে চাকুরী করে জীবিকা নির্বাহ করছেন।