বিশেষ করে শহরে বসবাসরত দিনমজুর ও নিম্ন আয়ের মানুষদের মাঝে রোজগার নিয়ে চরম অনিশ্চিয়তা দেখা দিয়েছে। তারা আশঙ্কা করছেন লকডাউনের সময় বাড়লে তাদের দুর্দশা আরও বেড়ে যাবে।
এমন পরিস্থিতিতে অনেকেই শহর ছেড়ে গ্রামে চলে যাচ্ছেন। আবার যারা শহরে থেকে যাচ্ছেন তারাও অনিশ্চয়তায় প্রহর কাটাচ্ছেন।
রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে নিম্ন আয়ের মানুষদের সাথে কথা বললে এমন হতাশার চিত্র উঠে আসে।
রাজধানীর ধানমন্ডি ৩২ নাম্বার এলাকায় ঘুরে ঘুরে চা বিক্রি করেন আফজাল হোসেন। করোনার আগে যা আয়-রোজগার হতো তাতে ভালোভাবেই চলতো তার সংসার। কিন্ত করোনায় রোজগার বন্ধ হয়ে যায়। করোনায় প্রথম লকডাউনে চরম দুর্দশার পর পরবর্তীতে আবারও রোজগার শুরু করেন। রোববার সকালেও চা বিক্রি করছিলেন তিনি।
লকডাউনের কথা বললে আফজাল বলেন, ‘আগের বার কোনমতে দিন পার করছি। এবার আর উপায় নাই। তাই বিকেলে ঢাকা ছেড়ে গ্রামের বাড়ি চলে যাবো।’
তিনি আরও বলেন, ‘লকডাউন বাড়লে ঢাকায় না খাইয়া থাকা লাগবো।’
আফজাল হোসেনের মতো একই অবস্থার কথা জানান রিকশা চালক জুম্মন। চাঁদপুর থেকে এসে ধানমন্ডি এলাকায় রিকশা চালান তিনি। গ্রামের বাড়িতে স্ত্রী, এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে তার।
রোজগার বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় ঢাকা ছেড়ে দেয়ার কথা জানিয়েছেন এই রিকশা চালক।
এদিকে ঢাকাসহ সারাদেশে পরিবহণ খাতে যারা বাস, মিনিবাসের ড্রাইভার, সুপারভাইজার বা হেলপার হিসেবে কাজ করেন তারা মজুরি পান প্রতিদিনের ট্রিপ বা যাতায়তের ওপর৷
ইতিমধ্যেই যাত্রী ও যাতায়াত দুটিই কমে যাওয়ায় তাদের আয় অনেক কমে গেছে৷
দ্বিতীয় দফায় লকডাউনে গণপরিবহণ বন্ধ হয়ে গেলে মালিকরা তাদের কোনো মজুরি দেবে কিনা তা নিয়ে রয়েছে অনিশ্চিয়তা৷ এছাড়া অটোরিকশা ও রাইড-শেয়ারিং-এ যারা কাজ করেন তারাও চিন্তিত।
বিশ্বব্যাংকের হিসেবে দেশে প্রায় আড়াই কোটি মানুষ দারিদ্র্য সীমার নিচে বসবাস করেন৷ যারা দিন আনে দিন খায়৷ তার উপর রয়েছেন নিম্ন আয়ের মানুষেরা৷ করোনায় শুধু তারাই নন, যারা চাকরিজীবী নিম্ন মধ্যবিত্ত এবং মধ্যবিত্ত সবাই সংকটে আছেন৷ দ্বিতীয় দফায় লকডাউনে সেই সঙ্কট আরো তীব্র হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।