গত জানুয়ারিতে আটক করা দক্ষিণ কোরিয়ার একটি জাহাজ ও এর ক্যাপ্টেনকে মুক্তি দিয়েছে ইরান। দক্ষিণ কোরিয়ার এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, মার্কিন নিষেধাজ্ঞায় দক্ষিন কোরিয়ার একটি ব্যাংকে জব্দ হয়ে যাওয়া ইরানি অর্থ ছাড় করার চেষ্টা করা হবে- এমন প্রতিশ্রুতি দেওয়ার পর শুক্রবার ওই জাহাজ ও তার ক্যাপ্টেন মুক্তি পেয়েছেন। রয়টার্স।
গত জানুয়ারিতে ওমান উপকূলের হরমুজ প্রণালী থেকে দক্ষিণ কোরিয়ার রাসায়নিকবাহী জাহাজটি আটক করে ইরানি কর্তৃপক্ষ। জাহাজটির বিরুদ্ধে তারা রাসায়নিক ছড়িয়ে সমুদ্র দূষণের অভিযোগ তোলে। এই জাহাজ নিয়ে কূটনৈতিক বিরোধে জড়ায় ইরান ও দক্ষিণ কোরিয়া।
ওই ইস্যুকে কাজে লাগিয়ে মার্কিন নিষেধাজ্ঞার আওতার দক্ষিণ কোরিয়ার ব্যাংকে জব্দ হয়ে থাকা ইরানের সাতশ’ কোটি ডলার ছাড় করাতে মরিয়া হয়ে ওঠে তেহরান। গত ফেব্রুয়ারিতে দক্ষিণ কোরিয়ার উপপররাষ্ট্রমন্ত্রীর তেহরান সফরের পর জাহাজটির ২০ জন কর্মীর সবাইকে মুক্তি দেয় ইরান। তবে আটক রাখা হয় জাহাজটির ক্যাপ্টেন ও রাসায়নিকবাহী জাহাজটি।
জাহাজ ও ক্যাপ্টেন মুক্তি পাওয়ার পর দক্ষিণ কোরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, সিউল ও তেহরান একমত হয়েছে যে জাহাজ ও তহবিল কোনও পারস্পারিক ইস্যু নয়। আর দক্ষিণ কোরিয়া ওই তহবিল ছাড় করাতে ইরানকে সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘তহবিল ইস্যু নিরসনে আমরা আমাদের জোরালো প্রতিশ্রুতি প্রকাশ করেছি।‘
দক্ষিণ কোরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, প্রশাসনিক প্রক্রিয়া শেষ করার পর জাহাজটি ইরান থেকে রওনা দিয়েছে। ওই বিবৃতিতে তহবিল ছাড় করার প্রতিশ্রুতি নিয়ে কিছু বলা হয়নি। মন্ত্রণালয়ের তরফ থেকে বলা হয়েছে, ‘ক্যাপ্টেন ও নাবিকেরা ভালো আছে।’
দক্ষিণ কোরিয়ার দাবি জাহাজটি কোনও ধরনের দূষণের জন্য দায়ী নয়। সিউলের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, জাহাজটির মালিকানাধীন কোম্পানির বিরুদ্ধে অপরাধের মামলা দায়েরের পরিকল্পনা বাতিল করেছে ইরান।
২০১৮ সালে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ২০১৫ সালে ইরানের সঙ্গে স্বাক্ষরিত পারমাণবিক চুক্তি থেকে বেরিয়ে গিয়ে তেহরানের ওপর নিষেধাজ্ঞা পুর্নবহাল করলে সিউলে আটকা পড়ে ইরানের সাতশ’ কোটি মার্কিন ডলার। বর্তমান মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন দায়িত্ব নেওয়ার পর ওই চুক্তিতে ফিরতে পরোক্ষভাবে আলোচনা শুরু করেছে ওয়াশিংটন ও তেহরান।