২৯ এপ্রিলের দিবাগত মধ্যরাতে কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, বরিশাল, পটুয়াখালী, বরগুনাসহ দেশের উপকূলীয় এলাকার ওপর দিয়ে ১৫ থেকে ২০ ফুট উচ্চতায় জলোচ্ছ্বাস আঘাত হানে। এতে ২ লাখ মানুষের প্রাণহানি ঘটে। তাদের মধ্যে কক্সবাজারের চকরিয়া ও পেকুয়া উপজেলায়ই অন্তত ২৫ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়। এছাড়া নিখোঁজ হয় এক লাখ মানুষ। ৭০ হাজার গবাদিপশু মারা যায়। ওই রাতের তাণ্ডবে প্রায় ১৫ হাজার কোটি টাকার ক্ষতি হয় বলে সরকারি হিসাবে বলা হয়। তবে বেসরকারি হিসাবে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ আরও অনেক বেশি হবে।
ঘূর্ণিঝড়ের ছোবলে সন্তান হারায় মা-বাবাকে, মা হারান তাঁর প্রিয় সন্তানদের, স্বামী হারান স্ত্রীকে, স্ত্রী হারান তার প্রাণের চেয়ে প্রিয় স্বামীকে। সে ভয়াল রাতের স্মৃতি মনে পড়লে উপকূলবাসী এখনও আঁতকে উঠে।সে প্রলয়ংকরী ঘূর্ণিঝড়ের ৩০ বছর অতিবাহিত হলেও কক্সবাজারসহ বৃহত্তর চট্টগ্রামের উপকূলবাসী এখনও অরক্ষিত। তার সঙ্গে যোগ হয়েছে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব। সে কারণে প্রতি বছরই বাড়ছে ঝড়, জলোচ্ছ্বাস ও বন্যা। এদিকে ২৯ এপ্রিল নিহতদের স্মরণে আজ দেশের উপকূলের প্রতিটি বাড়িতে ফাতেহা চলছে। কোরআনখানি, মিলাদ মাহফিল, দোয়া মাহফিল, আলোচনা সভা, কাঙালিভোজ, চিত্র প্রদর্শনীসহ নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করছেন নানা সংগঠন।
১৯৯১ সালের এই দিনে সবচেয়ে বেশি প্রাণহানি ঘটে কক্সবাজারের কুতুবদিয়া ও মহেশখালীর ধলঘাটা উপ-দ্বীপে। এখানে এমন কোনো বাড়ি বা ঘর নেই যে বাড়ি বা ঘর থেকে পাঁচ/ছয়জন লোক মারা যায়নি। তাই এ দিনটি এলে এখনও প্রতিটি বাড়িতে কান্নার রোল পড়ে যায়। উপকূলবাসীর একটাই দাবি—টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণ করে যেন দেশের উপকূলকে সাগরের করালগ্রাস থেকে রক্ষা করা হয়।