আত্মীয়ের বাড়িতে ঘুরতে যাওয়ার কথা বলে পরিকল্পনা অনুয়ায়ী পাটক্ষেতে নিয়ে স্ত্রী রাখি খাতুনকে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। পুলিশের কাছে হত্যার দায় স্বীকার করে এমন জবানবন্দি দিয়েছেন অভিযুক্ত মিলন ইকবাল। রাখি খাতুন হত্যাকাণ্ডের ৬দিন পর হত্যার রহস্য উদ্ঘাটন শেষে পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা এই তথ্য জানান। পুলিশ সুপার জানান, মিলন ইকবাল পেশায় একজন পোশাকশ্রমিক। তিনি ঢাকার ডিবিএল গার্মেন্টসে ১৪হাজার টাকা বেতনে চাকুরি করেন। সেই সুবাদে স্বামী-স্ত্রী ঢাকায় একটি ভাড়া বাড়িতে থাকতেন। কিন্তু স্ত্রী রাখি খাতুনকে কোনভাবেই নিয়ন্ত্রণ করতে পারছিলেন না স্বামী মিলন ইকবাল। স্ত্রী রাখি কারণে অকারণে টাকা ব্যয় করতেন।
এ নিয়ে তাদের মধ্যে টানাপোড়েন চলছিল। একপর্যায়ে ক্ষিপ্ত হয়ে স্বামী মিলন ইকবাল পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী পাটক্ষেতে নিয়ে রাখি খাতুনকে হাতুরি দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করেন। সিংড়া সার্কেলের সিনিয়র সহকারি পুলিশ সুপার জামিল আক্তার জানান, নিহত রাখি খাতুন মিলন ইকবালের দ্বিতীয় স্ত্রী। সন্তান জন্ম দিতে না পারায় প্রথম স্ত্রী তালাক দিয়ে রাখি খাতুনকে বিয়ে করেছিলেন। কিন্তু রাখি খাতুনও দীর্ঘদিন সংসার করে সন্তান জন্মদিতে পারেননি। পরে মিলন ইকবাল গোদাগাড়ির পাকুড়িয়া গ্রামে তৃতীয় বিয়ে করেন। বিয়ের পর থেকেই দ্বিতীয় স্ত্রী রাখি বেহিসাবি হয়ে পড়েন।
পুলিশ সুপার বলেন, রাখি খাতুনের বিলাসিতার কারণে তৃতীয় স্ত্রীকে ঠিকঠাক ভরণ-পোষণ দিতে পারতেন না মিলন ইকবাল। এর একপর্যায়ে ক্ষোভ থেকে ৩১ মে গুরুদাসপুরের কাছিকাটা মাঠের একটি পাটক্ষেতে নিয়ে স্ত্রী রাখিকে হাতুরি দিয়ে মাথায় আঘাত করে হত্যা করেন।
পাটক্ষেতে স্ত্রীর লাশ ফেলে পালিয়ে যান স্বামী মিলন ইকবাল। ১জুন (মঙ্গলবার) বিকেলে ঘটনাটি জানাজানি হয়। এ ঘটনায় নিহত রাখির ভাই মোরসালিন রাখির প্রথম স্বামী ইছারুল ও বর্তমান স্বামী মিলন ইকবালকে অভিযুক্ত করে গুরুদাসপুর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার প্রেক্ষিতে পুলিশ ৫ জুন (শনিবার) তৃতীয় স্ত্রীর বাবার বাড়ি গোদাগাড়ির পাকড়ি গ্রাম থেকে মিলন ইকবালকে গ্রেপ্তার করা হয়।